মোংলা প্রতিনিধিঃ মোংলা বন্দরের শিল্প এলাকায় নির্মাণাধীন দুইটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষের সিভিল ও হাইড্রোলিক বিভাগের এক সার্ভেয়ারের (ভূমি জরিপকারী) বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। মেসার্স মীর গ্রæপের এলপিজি প্লান্টের কনসাল্টিং ফার্মের জেটি নির্মাণ ও ইউনাইটেড রিফাইনারীজ অ্যান্ড বাল্ক ষ্টোরেজ লিমিটেডের কাছ থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকা ঘুষ নেয় সার্ভেয়ার মোঃ ইমরান চৌধুরী। তাকে এ ঘটনায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন। তবে ইমরানের দাবী, তাকে বরখাস্ত করা হয়নি, দীর্ঘদিন ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ায় চাকরীতে অনুপস্থিত আছেন। এদিকে এই ইমরান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মোংলার দুই সাংবাদিকের জমি জরিপের ব্যাপারেও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।
মোংলা বন্দরের শিল্প এলাকায় নির্মাণাধীন মেসার্স মীর গ্রæপের এলপিজি প্লান্টের কনসাল্টিং ফার্মের মার্কেটিং অফিসার মোঃ খলিলুর রহমান জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানটির এলপিজি প্লান্টের জন্য বালু ভরাট ও বিদেশ থেকে আমদানী করা অপরিশোধীত গ্যাসবাহী জাহাজ ভিড়ার জন্য জেটি নির্মাণের অনুমতি পাইয়ে দিতে বন্দরের সিভিল অ্যান্ড হাইড্রোলিক বিভাগের ল্যান্ড সার্ভেয়ার ইমরান চৌধুরীকে সোনালী ব্যাংক, ডাচ বাংলা ও বিকাশের মাধ্যমে সাড়ে ৭ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়া হয়। এছাড়াও সার্ভেয়ার এমরান অপর আরেকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড রিফাইনারীজ এ্যান্ড বাল্ক ষ্টোরেজ লিমিটেড (দাহ্য পদার্থ কারখানা) এর অবৈধভাবে লে আউট প্লান পাশের অনুমতি পাইয়ে দিতেও ইউনাইটেড কারখানা কর্র্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে সুন্দরবন থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে পরিবেশ বিনষ্ট হয় এমন সব শিল্প কারখানা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ল্যান্ড সার্ভেয়ার ইমরান ঘুষ নিয়ে অনুমতি পাইয়ে দিবেন বলেই ওই দুই কোম্পানীর পক্ষ থেকে পৃথকভাকে তাকে এ ঘুষের টাকা দেয়া হয় বলেও জানান মীর গ্রæপের এলপিজি প্লানের কনসাল্টিং ফার্মের মার্কেটিং অফিসার মোঃ খলিলুর রহমান জানান।
এদিকে এ ঘটনায় ওই সার্ভেয়ার ইমরান চৌধুরীকে সাময়ীক বরাখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) প্রনব কুমার রায়। তিনি বলেন, ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ল্যান্ড সার্ভেয়ার ইমরানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে প্রশাসন বিভাগে ন্যাস্ত করে ঘটনাটির তদন্ত করা হচ্ছে। ওদিকে ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি তদন্ত করছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের উর্ধ্বতন হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলদার শাহাবাজ। তবে তদন্তাধীন বিষয়ে এই মূহুর্তে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সিভিল অ্যান্ড হাইড্রোলিক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শওকত আলী বলেন, ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি তিনিও শুনেছেন, এ নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে অভিযুক্ত ল্যান্ড সার্ভেয়ার ইমরান চৌধুরী বলেন, ঘুষ নয়, তার বাবা ওই কোম্পানীর কাছে টাকা পেতো, তিনি সেই টাকা নিয়েছেন। আর বরখাস্তের বিষয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি চাকরীতে অনুপস্থিত আছেন। #